তীব্র বা ক্ষণস্থায়ী পিঠে ব্যাথা কয়েক দিন বা সপ্তাহের জন্য স্থায়ী হয়। এর ফলে পিঠে অনবরত ব্যাথা, পিঠে টান অনুভূত হয়। দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যাথা তিন সপ্তাহের অধিক সময় ধরে থাকে।
ভুলভাবে বসা, দাঁড়ানো, ঝুঁকে পড়া বা কোনও জিনিস তোলার ফলে পিঠে ব্যাথা শুরু হয়। পিঠে ব্যাথার ফলে কোনও গুরুতর সমস্যা হয় না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১-২ সপ্তাহের মধ্যে ব্যাথা সেরে যায়। ব্যাথা কমাতে ব্যাথার ওষুধ বা ‘পেনকিলার’ ব্যবহার করা হয়। কারণে
তথ্যসূত্র- www.nlm.nih.gov
www.ninds.nih.gov
www.cdc.gov
www.nhs.uk
পিঠের উপরিভাগে বা মধ্যভাগে ব্যাথা- গলা থেকে শুরু করে বুকের পাঁজরের যে কোনও জায়গা থেকে পিঠের উপরের বা মাঝের দিকে যন্ত্রণা শুরু হয়। পিঠের নিচের দিকে যন্ত্রণার থেকে উপরের বা মাঝের দিকে ব্যাথা অনেক বেশি সাধারণ। কারণ পিঠের উপরিভাগের হাড়, গলা এবং পিঠের নিচের অংশের তুলনায় কম নমনীয়। পিঠের উপরের বা মাঝের অংশে মাঝেমাঝে তীক্ষ্ণ ব্যাথা অনুভূত হয়, লক্ষণগুলি হল-
· হাত এবং পায়ের দুর্বলতা
· হাত, পা, বুক, পেটের কিছু অংশ অবশ হয়ে যাওয়া বা চিনচিন করা
পিঠের নিচের অংশে যন্ত্রণা-
এক্ষেত্রে শুধুমাত্র পিঠের নিচের অংশে যন্ত্রণা হয়। যন্ত্রণার ফলে-
· হঠাৎ করে কোনও জিনিস তুলতে গিয়ে কোমরে লাগে
· ভুলভাবে শোওয়া, বসার জন্য পিঠে যন্ত্রণা আরও বৃদ্ধি পায়।
· অনেক সময় কোনও কারণ ছাড়াও যন্ত্রণা বেড়ে যায়।
· এক্ষেত্রে যন্ত্রণা রাতের দিকে বেড়ে যায়। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ এক অবস্থায় বসে থাকলে ব্যাথা বাড়ে, যেমন বহুক্ষণ ধরে গাড়িতে ভ্রমণ করলে অবস্থার অবনতি হয়। সোজা, লম্বা হয়ে শুয়ে থাকলে যন্ত্রণা কিছুটা লাঘব হয়।
অন্য প্রকার পিঠে ব্যাথা-
· ব্যাথা বা ঘাড়ের নমনীয়তা কমে যাওয়ার ফলে পোশাক পরতে, গাড়ি চালাতে এমনকি ঘুমাতেও সমস্যা হয়। এর থেকে পরবর্তীকালে ‘ফ্রজেন সোল্ডার’ হতে পারে।
· হাঁটার সময় গাঁটে গাঁটে ব্যাথা। সকালের দিকে হাত পা শক্ত, অনমনীয় হয়ে যাওয়া আর্থারাইটিসের উপসর্গ বলে গণ্য করা যেতে পারে।
· পিঠের নিচের অংশে ব্যাথা, নিতম্বে যন্ত্রণা, ঘাড়ে ব্যাথা, ‘স্যাকরোলিয়াক’ অস্থি সংযোগে ( যা শ্রোণীর সঙ্গে মেরুদণ্ডকে যুক্ত করে) ব্যাথা, অ্যাঙ্কোলসিস স্পন্ডিলাইটিসের উপসর্গ।
· ঘাড়ে ব্যাথা, ঘাড়ের অনমনীয়তা , মাথা যন্ত্রণা, পিঠের নিচের অংশে ব্যাথা ‘হুইপল্যাশে’র লক্ষণ।
· পিঠের নিচের অংশে যন্ত্রণা থেকে তা একটি বা দুটি পায়ে ছড়িয়ে পড়া ‘সায়টিকা’র লক্ষণ হতে পারে।
· পিঠের নিচের দিকে টনটন করা, পেশির দুর্বলতা, অনমনীয় পেশি থেকে ‘স্লিপ ডিস্ক’ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। যদি কেউ ‘স্লিপ ডিস্কে’ আক্রান্ত হন, তাহলে যন্ত্রণা ক্রমশ পায়ের নিচের দিকে বাড়তে শুরু করে।
তথ্যসূত্র- www.nhs.uk
· একটানা অনেক্ষণ ঝুঁকে থাকা
· ভুলভাবে কোনও জিনিস ছোড়া, তোলা, বয়ে নিয়ে যাওয়া।
· হাত বা পা মটকান
· বেশি প্রসারিত করা
· বিরতি ছাড়াই দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানো, ভুলভাবে বসে গাড়ি চালানো
· খেলা বা কোনও শারীরিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে পেশির অত্যধিক ব্যবহার
ঝুঁকির কারণ-
· গর্ভাবস্থা
· অত্যধিক ওজন বা ওবেসিটি
· হাড়ের দুর্বলতা
· মানসিক চাপ
· অবসাদ
তথ্যসূত্র- www.nlm.nih.gov
অধিকাংশ পিঠে যন্ত্রণার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না, সাধারণ ব্যাথা কমানোর ওষুধ (পেন কিলার) এবং যত্নের ফলেই সেরে ওঠা সম্ভব। শারীরিক পরীক্ষার ফলে হাঁটাচলা , দাঁড়ানো, পায়ের দক্ষতা, বসা, কোমর ঘুরছে কিনা বোঝা যায়।
তথ্যসূত্র- www.nhs.uk
ব্যাথা উপশমকারী- প্যারাসিটামল এবং এনএসএআইডিএস ( নন- স্টেরয়েডিয়াল অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি ড্রাগস) যেমন আইব্রুফেন ব্যাথা কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
গরম এবং ঠাণ্ডা সেঁক- যেখানে ব্যাথা হয়েছে সেখানে একবার গরম একবার ঠাণ্ডা জল দিয়ে সেঁক করতে হবে। ঠাণ্ডা সেঁক দেওয়ার জন্য ‘আইস ব্যাগ বা প্যাক’ ব্যবহার করতে হবে, এছাড়া ঠাণ্ডা সব্জিও সেই জায়গায় চেপে ধরে রাখা যেতে পারে।
আরাম- আরাম করতে হবে, অত্যধিক মানসিক চাপ থেকে অবস্থার আরও অবনতি হয়।
ব্যায়াম- ১২ সপ্তাহের মধ্যে অন্তত আটটি পর্যায়ে প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে। একজন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে। এর ফলে পেশির কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।
তথ্যসূত্র- www.nhs.uk
· দৈনিক ব্যায়াম করলে পিঠের যন্ত্রণা রুখে দেওয়া যেতে পারে।
· সঠিকভাবে দাঁড়াতে হবে, সোজাভাবে সামনের দিকে মুখ করে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে হবে।
· ঠিকভাবে বসতে হবে, পিছনদিকে অল্প ঠেসান দিয়ে বসতে হবে।
· অল্প হিলযুক্ত জুতো পরতে হবে
· মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে হবে
· আচমকা কোনও কিছু করা যাবে না, এতে পেশিতে টান লাগতে পারে।
তথ্যসূত্র- www.nhs.uk